শরণার্থীদের কেবল স্বেচ্ছায় তাদের নিজ দেশে নিরাপত্তা এবং সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানোর সুযোগ করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। বুধবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে করা আইনি প্রতিষ্ঠান গার্নিকা থার্টিসেভেনের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি এ মন্তব্য করেন। ব্রিফিংয়ে মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর বর্বরতা এবং নৃশংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের বর্তমান নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রশ্ন উত্থাপন করেন জাতিসংঘের স্থায়ী এক সংবাদদাতা। বাংলাদেশ সরকার আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবে না বলে যে ঘোষণা দিয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডুজারিক বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থীরবিষয়ক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন এ প্রতিবেদককে। সাংবাদিক তার প্রশ্নে জানতে চান, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, তারা আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে না। তারা কী নতুন করে শরণার্থী নিতে সম্মত হয়েছে? ভারত জোরপূর্বক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে বলে সম্প্রতি গার্নিকা থার্টিসেভেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যে অভিযোগ করেছে, সে বিষয়ে জাতিসংঘের মন্তব্য কী? জবাবে ডুজারিক বলেন, আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, এ ধরনের কোনো রিপোর্ট আমার চোখে পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমাদের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানাই। তিনি বলেন, অবশ্যই রোহিঙ্গাদের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে জায়গা করে দিয়ে বাংলাদেশ খুব উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের বিভিন্ন কমিউনিটি উদারতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেখানে যেসব মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি, তা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহযোগিতা চালিয়ে যাবে বলে আমি খুব আশাবাদী। ডুজারিক আরও বলেন, আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলব, আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু দেখিনি। কিন্তু আপনাকে বলব, অনিরাপদ কোনো জায়গায় শরণার্থীদের জোর করে ঠেলে দেওয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ়। শরণার্থীদের কেবল স্বেচ্ছায় তাদের নিজ দেশে নিরাপত্তা এবং সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানো উচিত বলে উল্লেখ করেন এই মুখপাত্র।