পঞ্চগড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় যা হয়েছে সবই শুভঙ্করের ফাকি, মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এখন স্ত্রী ছেলে মেয়েসহ তার পরিবারের মোট সাত জন সদস্য। একমাত্র কর্মক্ষম ব্যাক্তি সে নিজেও মানসিক প্রতিবন্ধী। নৌকায় জমে থাকা পানি ফেলে দিয়ে প্রতিদিন পেত এক-দেড়শ টাকা। তাতেই কোনোমতে দিন পার করতেন বাচ্চুমিয়াসহ তার বাক প্রতিবন্ধী স্ত্রী সন্তান।
পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি ঘটনার মামলায় ছয়মাস ধরে জেল হাজতে বাচ্চুমিয়া। সে বোদা উপজেলার বদেশ্বরী এলাকার মৃত খলিল মিয়ার ছেলে। তার পরিবার এখন চলে খেয়ে না খেয়ে ।
অনুসন্ধানে জানা যায়,গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বদেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে, বোদা উপজেলার মারেয়া আউলিয়ার ঘাট করতোয়া নদী পারি দিয়ে যাওয়ার পথে নৌকাটি ডুবে যায়। এতে নিহত হয় ৭২ জন নারী-পুরুষ ও শিশু।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি ঘাট ইজারাদার আব্দুল জব্বারসহ চালক রবিউল ইসলাম ও বাচ্চুমিয়ার নামে মামলার সুপারিশ করে। পরে ২৭ ফেব্রুয়ারী অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল অধ্যাদেশ আইনের অভিযোগে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মূখ্য পরিদর্শক শফিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
এ মামলায় ইজারাদার আব্দুল জব্বার ও বাচ্চুমিয়াকে ১৪ মার্চ পুলিশ আটক করে, ঢাকা সিএমএম আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। তারা বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে।
স্থানীয়রা (বিজয় টিভি 24 কে) জানান,নৌকা ঘাটটি শুধু আব্দুল জব্বারের নামে ইজারা নিয়ে, হাচেন আলীর ছেলে নুর নবী,নজরুল ইসলামের ছেলে নুর ইসলাম, সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য তারামিয়া মুলহোতা। অথচ আজ কোন কাগজপত্র না থাকায় মুলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।নিরিহ মানুষ আব্দুল জব্বার ও মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চুমিয়া জেল হাজতে।
আউলিয়ার ঘাট এলাকার সফিকুল ইসলাম, সুলতান,গ্রাম পুলিশ শাহজাহান, আব্দুল হালিম,জয়লা বেগম,আলিমসহ একাধিক ব্যক্তি (বিজয় টিভি ২৪ কে )জানান নৌকা ডুবির ঘটনায় মুলহোতারা জেলের বাইরে অথচ নিরিহ মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চুমিয়া জেল হাজতে। এসময় তারা বাচ্চুমিয়া কে মামলা থেকে অব্যাহতির জোর দাবী জানিয়েছেন।
বড়শশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম (বিজয় টিভি 24 কে ) জানান, নিয়ম আছে একজনের নামে ঘাট নেয়ার, তাই করছে। কিন্তু আটজনে মিলে ঘাট পরিচালনা করছে। বাচ্চুমিয়া জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তার পরিবারটি দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
এই ঘাট দিয়ে সব সময় যারা পার হচ্ছেন তারা বলছেন আমরা এই ঘাট দিয়ে সব সময় পার হই, এখানকার ঘাট ইজারাদার কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যার কাছে যেমন তেমন ভাবে অর্থ আদায় করছে এদের নেই কোন , ঘাট পারাপারের রিসিভ রশিদ। আমাদের মনে হয় যেখান থেকে এসব ঘাট ইযারা দেওয়া হয় তাদের গাফিলতির কারণে সচরাচর এসব ঘটনা ঘটছে। কর্তৃপক্ষ যদি এসব ঘাটের নীতিমালা চাট ব্যবস্থা করে দিত তাহলে এসব দুর্ঘটনার কবলে মানুষ করত না।